সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার বড় ভাইয়ের মেয়ের নামে মামলা করেছেন। নিউইয়র্কের ডাচেস কাউন্টির আদালতে ১০০ মিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণের ওই মামলায় নিউইয়র্ক টাইমস পত্রিকাকেও আসামি করা হয়েছে। মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, নিউইয়র্ক টাইমসের পুলিৎজার পুরস্কারবিজয়ী একটি রিপোর্টে তার ট্যাক্স রিটার্নের গোপন নথিপত্র হাতানোর জন্য একটি প্রতারণামূলক ছক এবং তার ভাতিজি মেরি ট্রাম্পের মাধ্যমে ওই ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করা হয়েছে।
২০১৮ সালে নিউইয়র্ক টাইমসে ট্রাম্পের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর সংশ্লিষ্ট জটিলতা নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এর জেরেই ট্রাম্প তার ভাতিজি মেরি ট্রাম্প ও নিউইয়র্ক টাইমসের তিন প্রতিবেদকের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। যে প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছিল, সেটির মূল সূত্র হিসেবে ছিলেন ৫৬ বছরের মেরি ট্রাম্প। ২০২০ সালে তার প্রকাশিত স্মৃতিকথায় তিনি ট্রাম্পের বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগ তোলেন, যা যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক এই প্রেসিডেন্ট অস্বীকার করেছেন।
গতকাল মঙ্গলবার নিউইয়র্কের একটি আদালতে মামলাটি করেন ট্রাম্প। নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদক সুসান ক্রেইগ, ডেভিড বার্স্টো ও রাসেল বুয়েটনারকে মামলায় আসামি করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ভাতিজি মেরির সঙ্গে যোগাযোগ করে এই কাজটি করেছিলেন তারা। মামলার বিবরণীতে বলা হয়, নিউইয়র্ক টাইমসের একদল সাংবাদিক ডোনাল্ড জে ট্রাম্পের কর সংশ্লিষ্ট গোপনীয় নথি পাওয়ার চেষ্টা করেছেন।
তারা তার ভাতিজি মেরির সঙ্গে যোগাযোগ করে তাকে এই বলে রাজি করেছিলেন যে, তিনি যেন অ্যাটর্নি অফিস থেকে সেসব নথি চুরি করে আনেন। অভিযোগে বলা হয়, তাদের ওই প্রতিবেদনটি ছিল প্রতিহিংসামূলক। তারা বাদীর অত্যন্ত গোপনীয় ও সংবেদনশীল রেকর্ডগুলো নিজেদের আয়ত্তে নিয়ে নিজেদের সুবিধামতো কাজে লাগাতে চেয়েছিলেন। ট্রাম্প পরিবারের আর্থিক বিষয়ে তদন্তমূলক ওই প্রতিবেদনটির জন্য ২০১৯ সালে নিউইয়র্ক টাইমস ও ওই তিন সাংবাদিক পুলিৎজার জিতেছিলেন।
পুলিৎজার কর্তৃপক্ষ সে সময় বলেছিল, ট্রাম্প তার সম্পত্তি নিজের অর্জিত বলে যে দাবি করে থাকেন, ওই প্রতিবেদন তার দাবি মিথ্যে প্রতিপন্ন করেছে এবং ব্যবসায়িক সাম্রাজ্য গড়ে তোলার পেছনে তার কর ফাঁকির দেওয়ার কাহিনি ফাঁস করে দিয়েছে। ট্রাম্প তার বাবার কাছ থেকে যে সম্পদ পেয়েছেন, সেখান থেকে তার বর্তমান সম্পদ ৪০০ মিলিয়ন ডলার। এর বেশিরভাগই তার বিভিন্ন প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে অর্জিত।
মেরি ট্রাম্প ডোনাল্ড ট্রাম্পের বড়ভাইয়ের মেয়ে। ট্রাম্পের বড়ভাই ১৯৮১ সালে অতিরিক্ত মদ্যপানের কারণে সৃষ্ট জটিলতা থেকে মৃত্যুবরণ কন। মেরি ২০২০ সালে তার স্মৃতিচারণমূলক ‘টু মাচ অ্যান্ড নেভার এনাফ: হাউ মাই ফ্যামিলি ক্রিয়েটেড দ্য ওয়ার্ল্ড’স মোস্ট ডেঞ্জারাস ম্যান’ লেখায় ট্রাম্প সম্পর্কে যেসব কথা বলেছিলেন, তার সূত্র ধরেই নিউইয়র্ক টাইমস তাদের ওই তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল।
সূত্র: এএফপি।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।